বিশালাক্ষী মন্দির প্রাঙ্গন
রামী চন্ডীদাস তীর্থ নানুর
মধ্যযুগের মানবাত্মার মহিমাকীর্তনকারী, চৈতন্য পূর্বকালের বৈষ্ণব মহাজন কবি চন্ডীদাসের ঢিবি ও তার পূজিতা দেবী বিশালাক্ষী মন্দির অবস্থান করেছে বীরভূমের নানুর।
বিশালাক্ষী বা বাশুলির মন্দিরে প্রবেশ করলে এর প্রাচীনত্ব অনুধাবন করা যায়। মন্দিরের সন্নিকটে অনুচ্চ টিলা যা চন্ডীদাস ঢিবি নামে পরিচিত। এই ঢিবির অন্তরালেই যেন লুকায়িত আছে অজানা ইতিহাস, চন্ডীদাস রহস্য ও মধুর-কান্ত-কোমল পদাবলী যা শুনে ভাববিহ্বল হতেন স্বয়ং চৈতন্যদেব।
চন্ডীদাস ঢিবি
বিশালাক্ষী মন্দিরের কারুকার্য
মেলা-উৎসবঃ চন্ডীদাস বৈষ্ণব পদ সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাজন, স্বাভাবিকভাবেই পালা কীর্তনের খুব বড় হরিসভা বসে চন্ডীদাসের ভিটেতে। মূলত মাঘী পূর্ণিমা কে কেন্দ্র করে সারা বাংলার কীর্তনীয়াগণ এসে পদ নিবেদনে জীবন সার্থক করেন। দোল পূর্ণিমার সময় কালে সপ্তাহব্যাপী বিশাল চন্ডীদাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
থাকা-খাওয়াঃ নানুরে সেভাবে থাকার জায়গা গড়ে ওঠে নি। খাওয়ার হোটেল দু-একটি আছে। এক্ষেত্রে বোলপুর বা লাভপুরে থেকে নানুর ঘুরে আসা অনেক বেশি সুবিধার।
বিশালাক্ষী মন্দির
বিশালাক্ষী মন্দির
কি কি দেখবেনঃ বাশুলি মন্দির ছাড়াও নানুরে আছে সেই পুষ্করনী যার ঘাটে রামী রজাকিনী কাপড় কাচতো, সেই বিশ্বাসে আজও রক্ষিত আছে রামির পাট। নানুরের কাছেই কীর্নাহারে আছে ভদ্রকালীমন্দির এবং জুবুটিয়ায় জপেশ্বর শিব মন্দির। কাছেই মিরিটি গ্রামে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বসত বাড়ি। নানুর বোলপুর সড়কপথে আছে বেলুটি গ্রাম যেখানে লোকশ্রুতি অনুসারে মহাকবি কালিদাস পূজিতা দেবী সরস্বতী মন্দির দেখা যাবে। আর একটু এগিয়ে গেলে সিদ্ধভূমি অট্টহাস এবং সোনারন্ধি রাজবাড়ি দেখা যাবে।
কি ভাবে যাবেনঃ বোলপুর থেকে বাসযোগে নানুর মাত্র বিশ কিলোমিটার পথ। ছোট গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যেতে পারে। লাভপুর থেকে বাস যোগে একই দূরত্বে নানুর পৌঁছে যাওয়া যাবে।