ময়নাডালে টেরাকোটার মন্দির
ময়নাডাল
খয়রাশোল ব্লকের রুক্ষ পাথুরে মাটির বুকে ছোট্ট একটি গ্রাম ময়নাডাল- সারা দেশের বৈষ্ণব সমাজে কীর্তনের গ্রাম নামে পরিচিত। কথিত আছে কাটোয়ার কেশব ভারতীর কাছে সন্ন্যাস গ্রহণের পর রাঢ়বঙ্গ বিচরণ কালে এই গ্রামেই তাল-তমাল তলে বিশ্রাম নিয়েছিলেন স্বয়ং চৈতন্যদেব। এই বিশ্রাম স্থলেই টেরাকোটার কারুকার্য নির্মিত মন্দিরে বিরাজ করেন মহাপ্রভু। পরম বৈষ্ণব নৃসিংহবল্লভ মিত্র ঠাকুর এই ময়নাডাল এসে মহাপ্রভুর বিগ্রহই শুধু প্রতিষ্ঠা করেন নি। এখানে মনোহরশাহী ঘরানা কীর্তনের প্রচলন করেন। হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে জানা যায় একসময় এই ময়নাডালে ছিল কীর্তন ও মৃদঙ্গ শিক্ষার চতুষ্পাঠী। এখনো ময়নাডালে কীর্তনধারা বর্তমান।
মন্দির প্রাঙ্গনে
ময়নাডাল মন্দিরের টেরাকোটা কাজ
উৎসব-মেলাঃ রাস, দোল, রথ, জন্মাষ্টমী প্রভৃতি উৎসবে ময়নাডালে বৈষ্ণব ভক্তের সমাগম হয়। নন্দ উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। খয়রাশোলে গোষ্ঠ মেলাও খুব বিখ্যাত।
থাকা-খাওয়াঃ ময়নাডাল একটি প্রান্তিক গ্রাম। সুতরাং থাকা-খাওয়ার জন্য নিকটবর্তী সিউড়ি বা বক্রেশ্বরের উপর নির্ভর করাই ভালো।
মন্দির প্রাঙ্গনে
এলাকার প্রাকৃতিক শোভা
কি কি দেখবেনঃ ময়নাডাল মহাপ্রভু মন্দির দর্শন করে কাছাকাছি রাজনগরের রাজবাড়ী দেখা যাবে। দুবরাজপুরে মামাভাগ্নে, পাহাড় হেতমপুর রাজবাড়ী পাবেন যাতায়াতের পথে। বক্রেশ্বর মন্দির একসঙ্গে দর্শন করা যাবে।
কি ভাবে যাবেনঃ সিউড়ি থেকে পাথরচাপুড়ির দাতাবাব ও রাজনগরের রাজবাড়ী দেখে খয়রাশোলের ময়নাডাল যেতে বাস রাস্তায় ৩৫ কিমি যেতে হবে। পথে খয়রাশোলের শৈলজা মুখোপাধ্যায় ও ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের জন্মস্থান দেখতে পারেন। পাবেন হিংলো ড্যামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আবার সিউড়ি থেকে দুবরাজপুর মামাভাগ্নে পাহাড়, হেতমপুর রাজবাড়ী দেখেও ময়নাডাল যাওয়া যায় দূরত্ব কাছাকাছি ৩৫ কিমি।